খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন

খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন? খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ইসলামের ইতিহাসে একজন বীর যোদ্ধা। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) 💓আল্লাহর তলোয়ার💓 বলা হয়। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) প্রায় ১০০ টি ও বেশি বড় যুদ্ধ করেছেন এবং ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ টি প্রতিটি যুদ্ধেই তিনি বিজয়ী হয়েছে।

image
খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন

পেজ সূচিপত্র : খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন

খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন? খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) পরিচয়

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) আনুমানিক প্রায় ৫৯২ হিজরিতে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওয়ালিদ ইবনে মুরগিরা, কুরাইশ বংশের মাখজুম গোত্রের শেখ। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এর মা  লুবাবা আলসুবরা বিনতে হারিস, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সহধর্মী-নি মাইমুনা বিনতে হারিসের চাচাতো বোন। এমনকি দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ফারুক (রাঃ) এর মামাত ভাই।

আরো পড়ুন: ইব্রাহিম (আঃ) এর বিবাহ

কুরাইশ বংশের রীতি অনুযায়ী খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) কে মরুভূমির বেদুইন দের কাছে রাখা হলো। সেখানকার বিশুদ্ধ আলো বাতাসে তার পালিত মায়ের কাছে খালিদ বিন ওয়ালিদ বড় হতে লাগলো। ছোটবেলায় খালিদ বিন ওয়ালিদ গুটি বসন্ত আক্রান্ত হয়েছিল এবং সেই গুটি বসন্তের চিহ্ন রয়ে গিয়েছিল।

পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সে মক্কায় তার বাবা-মার কাছে ফিরে আসেন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এবং তিনি বর্ষা নিক্ষেপ, তীর ধনুক চালানো, তরবারি চালানো প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তার পছন্দ ছিল বর্ষা নিক্ষেপ তিনি বর্ষা চালাতে বেশ পছন্দ করতেন। অল্প বয়সেই তিনি বর্ষা নিক্ষেপ, তীর ধনুক চালানো, তরবারি চালানোর কৌশলে বেশ খ্যাতি অর্জন করেন।

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণ

৬২৮ সালে হুদাইবিয়া সন্ধির ফলে মুসলিম এবং মক্কার কুরাইশদের সাথে ১০ বছরের শান্তি চুক্তি হয়। এই সময় খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ৬২৯ সালে মে মাসে ইসলাম গ্রহণ উদ্দেশ্যে মদিনার দিকে রওনা করেন।

আরো পড়ুন: সূরা ফাতিহা শানে নুযুল - সূরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এর সাথে আমের ইবনে আসেশের এর পথেই দেখা হয়। তিনিও ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে মদিনা দিকে যাচ্ছিলেন। তারা একত্রে মদিনায় পৌঁছান এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ইসলাম গ্রহণ করেন।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশাবলী

রোমান দের বিরুদ্ধে অভিযানে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খালিদ বিন ওয়ালি (রাঃ) সহ আরো অনেকে পাঠিয়েছিলেন। সেই  যুদ্ধের নেতৃত্ব বা লিডার হিসেবে একের পর এক করে তিনজন সাহাবীর নাম ঘোষণা করলেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তিনি বলেছিলেন এরা তিনজন যদি শহীদ হয়ে যায়। তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে যে কোন একজনকে নির্বাচন করে নেবে। যে তিনজনের নাম ঘোষণা করেছিলেন,

  1. জাইদ ইবনে হারিস
  2. জাফর ইবনে আবেদ আলী
  3. এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আওয়াহ

শয়তান তাদের তিনজনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল। তোমরা মারা যেতে পারো তোমরা যুদ্ধের অংশগ্রহণ করোনা ইত্যাদি। তারা বলল আমরা যদি এই যুদ্ধে শহীদ হয়ে যাই তাহলে এটা আমাদের সৌভাগ্য। আর মুমিনরা কখনো মৃত্যুকে ভয় পাই না।

আরো পড়ুন: সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া

এই যুদ্ধে রোমান দের প্রায় ১০ হাজার সৈনিক ছিল এবং খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) দের সৈনিক সংখ্যা ০.৩ হাজার যুদ্ধ চলাকালীন সময় প্রথমে জাইদ ইবনে হারিস শহীদ হন। তার পর হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ অনুযায়ী জাফর ইবনে আবেদ আলী দায়িত্ব পালন করেন। তিনিও শহীদি মর্যাদা লাভ করে। এরপর বাকি রয়েছে একজন তিনি হলেন আব্দুল্লাহ ইবনে আওয়াহ তিনিও এক পর্যায়ে শহীদি মর্যাদা লাভ করেন।

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) {যুদ্ধ}

(খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ইসলাম গ্রহণের পর তার প্রথম যুদ্ধ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নির্দেশ অনুযায়ী তাদের মধ্যে একজন কে নির্বাচন করা হলো। তিনি হলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) কে না জানে তার তলোয়ার চালানো এবং বর্ষা নিক্ষেপ সহ যুদ্ধের নানা কৌশল। সে যুদ্ধের সাহাবীদের মধ্যে থেকে তাকে নির্বাচন করতে খুব বেশি সময় লাগেনি।

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) নেতৃত্বে আসার পর অল্প কিছুক্ষণ সময়ের মধ্যেই যুদ্ধে পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যায়। সেই যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) নয়টি তরবারি ভেঙ্গে গিয়েছিল। এমন কৃতিত্বের জন্য খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) কে (সাইফুল্লাহ) আল্লাহর তরবারি বলা হয়। ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় সপ্তাহে রোমান বাহিনী রোমানের প্রান্তরে বর্তমানে জর্ডানে অংশে যুদ্ধটি হয়েছিল।

আরো পড়ুন: মুমিন কাকে বলে ঈমানের ফল কি?

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ভাবলেন ৩ হাজার সেনাবাহিনী নিয়ে তাদেরকে একেবারে কতল করা সম্ভব না। সেজন্য তিনি নতুন একটি প্রক্রিয়ায় যুদ্ধ আরম্ভ করেন একপর্যায়ে তাদের সেনাপ্রধান মুসলিম বাহিনীর কাছে অতল হয়। এতে তারা অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে তারা আস্তে আস্তে সরতে থাকে এবং মুসলিম বাহিনঠা মরুভূমির দিকে সরতে থাকে। আর তাদের জন্য মরুভূমির দিকে এগিয়ে আসা মানে এক প্রকার মরণ ফাঁদ।

এক পর্যায়ে তারা চলে যায় এবং খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) তার সৈন্যদল নিয়ে ফিরে আসেন। এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর ১২ জন সাহাবী শহীদি মর্যাদা লাভ করেন। এবং রোমানদের ক্ষয়ক্ষতি সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

খালিদ বিন ওয়ালিদের জীবনী অন্তিম পর্যায়ে {মৃত্যু}

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) মৃত্যুর সময় বলছিলেন আমি কেন বৃদ্ধ ঘোড়ার মত মারা যাচ্ছি? আমি শহীদ হওয়ার জন্য অনেক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। তার স্ত্রী কে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) বলল আমার শরীরের এমন কোন জায়গা আছে কি দেখো যেখানে চুরি বা তলোয়ারের আঘাতে নেই তার স্ত্রী বলল আপনার শরীরে প্রতিটি জায়গায় দাগ রয়েছে।

আরো পড়ুন: ইব্রাহিম আঃ এর কোরবানির ইতিহাস

তার স্ত্রী খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) বলল আপনি আল্লাহ তাআলার তরবারি। আপনার কোন যুদ্ধেই মৃত্যু হতে পারে না, কেননা আপনি আল্লাহর তরবারি, কে এমন কে আছে যে আপনাকে হত্যা করবে। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) ইসলাম গ্রহণের ২৪ বছর পর ৬৪২ খ্রিস্টাব্দে CE হোমস,সিরিয়া মৃত্যুবরণ করেন।

(খালিদ বিন ওয়ালিদের জীবনী আমাদের অনুপ্রেরণা আমরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য কে ভুলতে বসেছি। মুসলিমরা কোনদিনই পিছিয়ে ছিল না আমরা আমাদের কোরআন সুন্নাহ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য আজ আমরা বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত অপমানিত অপদস্ত হচ্ছি)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন 👇🏼 (Share it)

Before. পূর্বের পোস্ট দেখুন After. পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url