ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি
ইসলামিক
একটা সমাজে বিভিন্ন রকমের মানুষ বসবাস করে। এবং এক এক জনের পছন্দ একেক রকম, কেউ গাজা খাই, কেউ সিগারেট খায়, কেউ মদ খাই, ইত্যাদি আবার কেউ এসবের কিছুই খায় না। এর মাঝেই অনেকের প্রশ্ন ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? উত্তর👇
ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? (gaja) |
এই কনটেন্টিতে আমরা আলোচনা করব কুরআন এবং হাদিস থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? আমরা এমন একটি কিতাব থেকে আলোচনা করতে চলেছি যে কিতাবের একটি যাবার কিংবা যের কোন কিছুই কারো পক্ষে পরিবর্তন করা সম্ভব না। আশা করি গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন।
সূচিপত্র: ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি?
- ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? (কুরআন থেকে উত্তর)
- ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? (হাদিস থেকে উত্তর)
- শেষ কথা
ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? (কুরআন থেকে উত্তর)
সূরা ০৫ মায়িদাহ, আয়াত নং ৯০
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَالۡمَيۡسِرُ وَالۡاَنۡصَابُ وَالۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّيۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ٩٠
অর্থ: হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানী কাজ, তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমন্ডিত হতে পার। (৯০)
সূরা ০৫ মায়িদাহ, আয়াত নং ৯১
اِنَّمَا يُرِيۡدُ الشَّيۡطٰنُ اَنۡ يُّوۡقِعَ بَيۡنَكُمُ الۡعَدَاوَةَ وَالۡبَغۡضَآءَ فِى الۡخَمۡرِ وَالۡمَيۡسِرِ وَيَصُدَّكُمۡ عَنۡ ذِكۡرِ اللّٰهِ وَعَنِ الصَّلٰوةِ ۚ فَهَلۡ اَنۡـتُمۡ مُّنۡتَهُوۡنَ ٩١
অর্থ: মদ আর জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তো চায় তোমাদের মাঝে শত্রুতা আর বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে, আল্লাহর স্মরণ আর নামায থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে। কাজেই তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে? (৯১)
সূরা ০৪ নিসা, আয়াত নং ৪৩
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡرَبُوا الصَّلٰوةَ وَاَنۡـتُمۡ سُكَارٰى حَتّٰى تَعۡلَمُوۡا مَا تَقُوۡلُوۡنَ وَلَا جُنُبًا اِلَّا عَابِرِىۡ سَبِيۡلٍ حَتّٰى تَغۡتَسِلُوۡا ؕ وَاِنۡ كُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤى اَوۡ عَلٰى سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡكُمۡ مِّنَ الۡغَآٮِٕطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَيَمَّمُوۡا صَعِيۡدًا طَيِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡهِكُمۡ وَاَيۡدِيۡكُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا ٤٣
অর্থ: হে ঈমানদারগণ! তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সলাতের নিকটবর্তী হয়ো না যতক্ষণ না তোমরা যা বল, তা বুঝতে পার এবং অপবিত্র অবস্থায়ও (সলাতের কাছে যেও না) গোসল না করা পর্যন্ত (মসজিদে) পথ অতিক্রম করা ব্যতীত; এবং যদি তোমরা পীড়িত হও কিংবা সফরে থাক; অথবা তোমাদের কেউ শৌচস্থান হতে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী সঙ্গম করে থাক, অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম কর, আর তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাসহ কর; আল্লাহ নিশ্চয়ই পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। (৪৩)
আরো পড়ুন: এইডস এর লক্ষণ
আপনারা এই সূরাগুলোর শানে নুযূল সহকারে পড়লে আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। এবং কোন আয়াত বুঝতে সমস্যা হলে প্রয়োজনে নিকটস্থ মসজিদের ইমাম সাহেবের সাহায্য নিতে পারেন।
আলহামদুলিল্লাহ, আমরা কুরআন থেকে জানলাম ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? এবার হাদিস থেকে জানার চেষ্টা করব, ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? তাহলে আশা করা যায় আমাদের মাঝে বিড়ি, সিগারেট, মদ, গাজা সহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়া যাবে কি ? যাবে না। এর উত্তর পেয়েছি, এবার হাদিস থেকেও পেয়ে যাব। এতে আমাদের বুঝতে অনেক সহজ হবে।
ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি? (হাদিস থেকে উত্তর)
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৪৩৪৩
আবূ মূসা আশ'আরী (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত,
নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাঁকে (আবূ মূসাকে গভর্নর নিযুক্ত করে) ইয়ামানে পাঠিয়েছেন। তখন তিনি ইয়ামানে তৈরি করা হয় এমন কতিপয় শরাব সম্পর্কে নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐগুলো কী কী? আবূ মূসা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বললেন, তা হল বিত্উ ও মিয্র শরাব। বর্ণনাকারী সা'ঈদ (রহঃ) বলেন, আমি আবূ বুরদাহকে জিজ্ঞেস করলাম বিত্উ কী? তিনি বললেন, বিত্উ হল মধু থেকে গ্যাঁজানো রস আর মিয্র হল যবের গ্যাঁজানো রস। (সা'ঈদ বলেন) তখন নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন, সকল নেশা উৎপাদক বস্তুই হারাম। হাদীসটি জারীর এবং 'আবদুল ওয়াহিদ শাইবানী (রহঃ)- এর মাধ্যমে আবূ বুরদা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) সূত্রেও বর্ণনা করেছেন
আরো পড়ুন: মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ৫১০৬
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিত’ই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো। তিনি বললেন, নেশাগ্রস্ত করে এমন সকল প্রকার পানীয়ই নিষিদ্ধ
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ২৩১৬
উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, নু’আইমানকে অথবা ইবনু নু’আইমানকে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় আনা হল। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে উপস্থিত লোকদেরকে তাকে প্রহার করতে আদেশ দিলেন। রাবী বলেন, যারা তাকে প্রহার করেছিল, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। আমরা তাকে জুতা দিয়ে এবং খেজুর ডাল দিয়ে প্রহার করেছি।
সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ২৪২
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা হারাম।
শেষ কথা
আলহামদুলিল্লাহ আমরা কোরআন এবং হাদিসের আলোকে জানতে পারলাম ইসলামের দৃষ্টিতে গাজা খাওয়া কি, এবং এটাও জানতে পারলাম নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়া কি। আমাদের সকলকে আল্লাহর আদেশ এবং নির্দেশ পালন করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
রোগ ও সমস্যা
ধন্যবাদ-Thanks
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url