সিফিলিস রোগের লক্ষণ
রোগ ও সমস্যা
সিফিলিস রোগের শারীরিক মিলনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। সিফিলিস রোগের থেকে আমাদের বাঁচতে সিফিলিস রোগের লক্ষণ, সিফিলিস কি? রোগ নির্ণয় করা, সিফিলিস রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়ে জানা দরকার। নিচে সিফিলিস রোগের লক্ষণ সহ বিস্তারিত থাকছে👇।
![]() |
সিফিলিস রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা |
পেজ সূচিপত্র: সিফিলিস রোগের লক্ষণ সহ বিস্তারিত
- সিফিলিস কি ? (Syphilis)
- সিফিলিস রোগের লক্ষণ
- সিফিলিস রোগ নির্ণয় (Investigation)
- সিফিলিস রোগের চিকিৎসা
- সিফিলিস প্রতিরোধ
- শেষ কথা
সিফিলিস কি ? (Syphilis)
সিফিলিস রোগটা ট্রিপনেমা প্যালিডাম (Treponema Pallidum) নামক জীবাণু দ্বারা হয়। মিলনের সময় এই জীবাণু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে এবং সিফিলিস রোগ সৃষ্টি করে।
সিফিলিস রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশের ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণত রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।
তিনটি পর্যায়ে সিফিলিস রোগের লক্ষণ ব্যাখ্যা করা হলো
সিফিলিস রোগের লক্ষণ
(১) প্রাথমিক পর্যায়ে: প্রাথমিকভাবে এই রোগে যৌনাঙ্গে ঘা দেখা দেয়। মলদ্বারেও ঘা দেখা দিতে পারে। পরবর্তীতে ত্বক এবং শরীরে শ্লৈস্মিক আবরণে ঘা দেখা দেয়। সিফিলিস রোগে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, হাড়, স্নায়ু এবং হৃদযন্ত্র আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এই রোগ খুবই সংক্রামক। মায়ের সিফিলিস হলে তা শিশুর মধ্যেও সংক্রমিত হয়ে নবজাতকের জন্য ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেয়। সেজন্য নিজেকে এবং নবজাতকে সিফিলিস রোগ থেকে বাঁচাতে যৌনাঙ্গে ঘা হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুন: সকল রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
সিফিলিসের প্রাথমিক অবস্থাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে ৩-৮ সপ্তাহের মধ্যে ঘা শুকিয়ে যায়। এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণ ৩-৬ সপ্তাহ পরে সাধারণত দেখা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণের সাথে সাথে দ্বিতীয় পর্যায়ে লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
(২) দ্বিতীয় পর্যায়: দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণ গুলোর শতকরা ৭৫ ভাগের ত্বকে র্যাস দেখা দেয়, শতকরা ৩০ ভাগের এই পর্যায়ে শ্লৈস্মিক আবরণে ঘা থাকে। এছাড়া ৫০% রোগীর লসিকা গ্রন্হ গ্রন্থি স্ফীত (Lymph node swelling) হতে দেখা যায়।
![]() |
শ্লৈস্মিক আবরণে ঘা |
(৩) তৃতীয় পর্যায়ে: সিফিলিসের চিকিৎসা করা না হলে ৩-১০ বছরের মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষণ গুলো দেখা দেয়। এই পর্যায়ে ত্বক, শ্লৈস্মিক আবরণ, হাড়, জয়েন্ট এবং অন্যান্য স্থানে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে সুপারির বীচির আকারে গোটা হয় এবং স্নায়ু আক্রান্ত হয় এবং প্যারালাইসিস ও অবশ হয়।
সিফিলিস রোগ নির্ণয় (Investigation)
এই সিফিলিশ রোগ থেকে বাঁচতে হলে রোগ নির্ণয় করতে হবে। সেজন্য আপনারা যখন সিফিলিস রোগের লক্ষণ গুলো দেখতে পাবেন তখন নিশ্চিত হওয়ার জন্য কয়েকটি টেস্টের মাধ্যমে জানা যাবে আপনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত কিনা দুশ্চিন্তা না করে।
প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ দেখা দেবার দুই সপ্তাহ পরে ভিডিআরএল (VDRL) পরীক্ষায় রোগ নির্ণয় করা যায় এবং টিপিএইচএ (TPHA), টিপিআই (TPI) টেস্ট করে সহজে রোগ নির্ণয় করা যায়।
![]() |
টেস্ট -test |
আরো পড়ুন: চোখ ওঠার ড্রপ - চোখ উঠলে করণীয় ক
এই টেস্টগুলো হয়ে গেলে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন আপনি কি? আক্রান্ত, নাকি আক্রান্ত না।
সিফিলিস রোগের চিকিৎসা
সিফিলিসের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ মত যতপোযুক্ত চিকিৎসা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসকগণ পেনিসিলিন, টেট্রাসাইক্লিন, ডক্রাসাইক্লিন, ইরেথ্রোমাইসিন, এজিথ্রোমাইসিন ইত্যাদি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন।
![]() |
ওষুধ - medicine |
স্বামী-স্ত্রী যারই সিফিলিস হোক না কেন দুজনকেই একসাথে চিকিৎসা করতে হবে।
সিফিলিস প্রতিরোধ
সিফিলিস প্রতিরোধ প্রতিরোধের জন্য কয়েকটি পয়েন্ট উপস্থাপন করা হলো এগুলো সিফিলিস প্রতিরোধ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- যৌনাচারের সংযত আচরণ করতে হবে। বিশেষ করে মুসলিমদের দাম্পত্য জীবনে ইসলামী/ধর্ম অনুশাসন মেনে চলতে হবে। এতে যেই মেনে চলুক না কেন তাতে অনেক উপকার আছে।
- বহুগামীতা পরিহার করতে হবে।
- পতিতাদের সামাজিক পূর্ণবাসন করে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।
- গর্ভাবস্থার পূর্বেই সিফিলিসের যথাযথ চিকিৎসা করে ফেলতে হবে।
- চিকিৎসকগণ জীবাণু মুক্ত গ্লাবস ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন।
- স্বামী স্ত্রী উভয়েই একসাথে চিকিৎসা করতে হবে।
আরো পড়ুন: বাতজ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার
এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বনের মাধ্যমে সিফিলিস রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ।
শেষ কথা
আলহামদুলিল্লাহ, আপনারা এতক্ষণে সিফিলিস রোগের লক্ষণ, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা, রোগ প্রতিরোধ, এবং এই রোগে চিকিৎসকগণ কি ওষুধ ব্যবহার করে, ইত্যাদি বিষয়ে জেনে গেছেন। এখন আপনার যদি মনে হয় আমি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত তাহলে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করুন। এবং আমরা যারা সুস্থ আছি তারা নিজেরা সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি।
ধন্যবাদ-Thanks
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url