উদ্যোক্তা হওয়ার সেরা ১০টি কার্যকরী নতুন আইডিয়া
উদ্যোক্তা হওয়ার সেরা ১০টি কার্যকরী আইডিয়া যা ফলো করা উচিত সম্পর্কিত লেখা আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য যারা একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এই আর্টিকেলকে পড়লে আপনি উদ্যোক্তা কী, উদ্যোক্তা কেন হবেন, উদ্যোক্তার প্রধান গুণাবলী, সফল উদ্যোক্তা হওয়ার আইডিয়াসহ আরো অনেক বিষয় জানতে পারবেন।
তাই সুপ্রিয় পাঠক, আপনি যদি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
সূচিপত্র: উদ্যোক্তা হওয়ার সেরা ১০টি কার্যকরী নতুন আইডিয়া
- উদ্যোক্তা কি/উদ্যোক্তা কাকে বলে
- উদ্যোক্তা কেন হবেন এবং আইডিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ
- উদ্যোক্তার প্রকারভেদ গুলো কি কি
- উদ্যোক্তার প্রধান গুণাবলী গুলো কি কি
- সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যেগুলো ফলো করা উচিত
- উদ্যোক্তা হতে কিছু সেরা ব্যবসা
- উপসংহার-শেষ কথা
উদ্যোক্তা কী - উদ্যোক্তা কাকে বলে?
উদ্যোক্তা শব্দটি উদ্ভাবক শব্দের সমার্থক শব্দ গুলোর মধ্যে একটি। উদ্যোক্তা বলতে এমন একজন ব্যক্তি কে বোঝায়, যে সঠিকভাবে ব্যবসায়িক প্রকল্প গ্রহন করতে পারেন এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে একটি নতুন ব্যবসাকে দাঁড় করান।
উদ্যোক্তা এমন এক দৃষ্টিভঙ্গির নাম যা কেবল ব্যবসার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নতুন কিছু সৃষ্টি করার স্পৃহা কে বোঝায়।
একজন সফল উদ্যোক্তাকে উদ্ভাবনী শক্তি, নতুন কিছু করার স্পৃহা, ব্যবসায়িক মনোভাব সম্পন্ন এবং মানসিক দিক দিয়ে বেশ শক্তিশালী হতে হয়। আমরা জানি, পরিশ্রম উন্নতির চাবিকাঠি। আর সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে থাকে সৃষ্টিকর্তার রহমত ও কঠোর পরিশ্রম।
উদ্যোক্তা কেন হবেন এবং আইডিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ
উদ্যোক্তা কেন হবেন এবং আইডিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নের জবাব এক কথায় দেয়া কখনোই সম্ভব নয়। একটি দেশকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধশালী করার জন্য এবং দেশের উন্নয়নের জন্য উদ্যোক্তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
একজন উদ্যোক্তাই পারেন নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে। এতে একটি দেশের বেকারত্বের বোঝা কমে যায়, আর্থিক উন্নতি লাভ হয়, অনেকগুলো পরিবার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে।
বর্তমানে চাকরির পদ সংখ্যা কম থাকে এবং চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ও প্রতিযোগিতা তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি থাকে। তাই যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পদ সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকার কারণে অনেকের চাকরি হয় না। ফলে শিক্ষিত বেকার বৃদ্ধি পায়।
এক্ষেত্রে শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা শুধু চাকরির পিছনে না ছুটে তাদের মেধা কাজে লাগিয়ে ও সঠিক আইডিয়া অনুযায়ী উদ্যোক্তা হলে বেকার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। দেশ এগিয়ে যাবে এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও তারা নিজেদেরকে প্রেজেন্ট করতে পারবে।
চাকরির ক্ষেত্রে নিজেকে অন্যের অধীনে কাজ করতে হয়। সেখানে কাজের উপর নিজের কোন স্বাধীনতা থাকে না। কাজের পারিশ্রমিকেও লিমিটেশন থাকে। নিজে উদ্যোক্তা হলে এ ধরনের কোন সমস্যা পোহাতে হয় না। সে তার বিজনেস বা কাজকেও স্কেল করতে পারে।
উদ্যোক্তার প্রকারভেদ গুলো কি কি?
উদ্যোক্তা কত প্রকার ও কি কি তা নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও গুণ, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির উপর নির্ভর করে উদ্যোক্তাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- উদ্ভাবনী উদ্যোক্তা
- ফ্যাবিয়ান উদ্যোক্তা
- ড্রোন উদ্যোক্তা
- অনুকরণীয় উদ্যোক্তা
উদ্ভাবণী উদ্যোক্তারা তাদের উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে নতুন চিন্তা, ধারণা বা নতুন কিছু বাজারে এনে ব্যবসার প্রসার ঘটায়।
ফ্যাবিয়ান উদ্যোক্তা:
ফ্যাবিয়ান উদ্যোক্তারা ধৈর্যশীল হয় এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
ড্রোন উদ্যোক্তা :
ড্রোন উদ্যোক্তারা নতুনত্ব কে গ্রহণ না করে ঐতিহ্যবাহী বা সনাতন পদ্ধতি অনুসারে তাদের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
অনুকরণীয় উদ্যোক্তা:
এরা নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা, পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা দাঁড় করান ও প্রতিষ্ঠিত হন, যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকে।
উদ্যোক্তার প্রধান গুণাবলী গুলো কি কি?
একজন সফল উদ্যোক্তার মাঝে নিন্মুক্ত গুণাবলী গুলো দেখা যায়। এবং আপনি যদি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে অবশ্যই এই গুণগুলো আপনাদের অর্জন করা উচিত, যথা:
- সৎ ও কঠোর পরিশ্রমী হওয়া
- নিজের কাজকে ভালোবাসা
- জীবনের লক্ষ্য স্থির করা
- ধৈর্যশীল হয়ে কাজ করা
- কাজের প্রতি সময় দেয়া
- আমি পারবো, আমাকে দিয়ে কাজটি হবে এরকম আত্মবিশ্বাস থাকা
- সমস্যা আসলে তা মোকাবেলা করা, সহজে ভেঙে না পড়া
সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যেগুলো ফলো করা উচিত
১০টি কার্যকরী উদ্যোক্তা হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিম্নে দেয়া হলো:
- নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস: উদ্যোক্তা হওয়ার প্রথম আইডিয়াই হচ্ছে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস।আত্মবিশ্বাস ছাড়া কোন কাজেই সফল হওয়া যায় না। কোন কাজ শুরু করার পূর্বে এটা মনে মনে ভাবতে হবে যে, সৃষ্টিকর্তা আমার সাথে আছেন এবং আমি অবশ্যই কাজটি ভালোভাবে করতে পারবো।
- লক্ষ্য স্থির করা: আপনাকে অবশ্যই আপনার জীবনের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে যে, আপনি কি হতে চাচ্ছেন? আপনি যদি একজন উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আপনাকে কাজ করে যেতে হবে।
- মার্কেট রিসার্চ করা :উদ্যোক্তা হতে হলে আপনি যদি কোন পণ্য নিয়ে কাজ করেন তাহলে সে পণ্যটি মার্কেটে সহজলভ্য কিনা, পণ্যটি সেখানে কেমন চলবে, পণ্যটির পর্যাপ্ত ক্রেতা রয়েছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে মার্কেট রিসার্চ করতে হবে।প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
- অভিজ্ঞদের মূল্যায়ন :সফল উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে তাদের সাকসেস এবং ফেইল স্টোরি থাকলে সেগুলো শুনতে হবে। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন একজন উদ্যোক্তা হতে হলে কি কি স্টেপে মানুষ ভুল করে এবং কিভাবে পা ফেললে আপনি সহজেই সাফল্যের প্রান্তে পৌঁছতে পারবেন। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে।
- সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণ :উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সেমিনার থাকে সেগুলোতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে। অন্যান্য উদ্যোক্তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। নিজের কোন আইডিয়া থাকলেও তার শেয়ার করতে হবে। এসব সভা, সেমিনারে অন্যান্য উদ্যোক্তাদের যেমন মূল্যবান কথা জানা যায় ঠিক তেমনি আবার নিজের আইডিয়া শেয়ার করলে কোথাও ভুল থাকলেও সেটা ধরা যায়।
- ঝুঁকি নেওয়া: উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে কোন কাজ করার জন্য অনেক সময় ঝুঁকি নেওয়ার দরকার হতে পারে। তার জন্য সব সময় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। পজেটিভ নেগেটিভ দুটোই হতে পারে এতে ভেঙে পড়া যাবে না, এ ধরনের মোটিভ রাখতে হবে।
- ব্যক্তিত্ববোধ ও পরিশ্রম: একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী ও সুকৌশলী মানুষ হতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুকৌশল ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
- সঠিক জায়গায় ইনভেস্ট করা :উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে কোন কাজ শুরু করার পূর্বে বুঝে শুনে সঠিক জায়গায় ইনভেস্ট করতে হবে।
- নেটওয়ার্কিং: সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের সাথে নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি সবার সাথে কানেক্টেড থাকেন তাহলে অনেক বিষয় সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন এবং সহজেই নিজের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
- সঠিক বিজনেস পার্টনার : বৃহৎ পরিসরে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে অনেকে পার্টনারশিপে করতে চান। পার্টনারশিপে কোন কাজ করলে কাজের ভার অনেকটাই কমে যায়। এক্ষেত্রে এমন পার্টনার সিলেক্ট করতে হবে, যার মনোভাব এবং আপনার মনোভাব ও চিন্তাধারা যাতে একই রকম হয়। অর্থাৎ পার্টনার যাতে সঠিক হয়।
উদ্যোক্তা হওয়ার কিছু সেরা ব্যবসা
উদ্যোক্তা হওয়ার আইডিয়া তে এখন আমরা জানবো সেরা কিছু উদ্যোগ/স্টার্ট আপ বা ব্যবসা সম্পর্কে।
- হোমমেড ফুড বিজনেস
- ক্লোদিং বিজনেস
- হাতের কাজের তৈরি জিনিসপত্রের বিজনেস
- অর্নামেন্ট বিজনেস
- ডিজিটাল সার্ভিস এজেন্সি
- ড্রাই ফুড বিজনেস
- ড্রাই ফিস বিজনেস
- ড্রপ শিপিং বিজনেস
- অনলাইন কোর্স এবং প্রশিক্ষণ দেয়া
- টেইলারিং সার্ভিস
- মোবাইল সার্ভিসিং বিজনেস
- কসমেটিকস বিজনেস
- লেডিস ব্যাগ বিজনেস
আপনাদেরকে ইত্যাদি ব্যবসা গুলো সম্পর্কে শুধু কিছু পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার-শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, উদ্যোক্তা হওয়ার সেরা ১০টি কার্যকরী নতুন আইডিয়া নিয়ে লেখা আর্টিকেলটিতে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া নিয়ে খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি, যারা নতুন উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আর্টিকেল কি বেশ উপকারে আসবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ। (1219)
Thanks.
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url