পেঁয়াজ চাষের সময় ও উচ্চফলনের ১ টি চাষের পদ্ধতি

পেঁয়াজ চাষের সময়, পদ্ধতি, নিয়ম, মৌসুম ইত্যাদি বিষয়ে থাকছে সঠিক গাইডলাইন। পেয়াজের পাতা ভিটামিন-সি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাদ্য। এবং বিভিন্ন রান্নার কাজে মসলা হিসেবে পেজের চাহিদা অনেক বেশি।

image

সূচিপত্র: পেঁয়াজ চাষের সময় ও উচ্চফলন চাষের পদ্ধতি

(নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন)

পেঁয়াজ চাষের সময় এবং চাষের পদ্ধতি

পেঁয়াজ চাষের সময়: পেঁয়াজ মূলত শীতকালীন ফসল। আশ্বিন-কার্তিক মাসে এবং চারা লাগানো অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে রোপণ করতে হয়। তবে গ্রীষ্মকালীন জাত চৈত্র-বৈশাখ মাসে চাষ করা যায়।

পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি: এদেশে প্রধানত তিনভাবে পেঁয়াজের চাষ করা হয়। যথা:

  • আস্ত পেঁয়াজ লাগিয়ে
  • চারা তৈরি করে
  • এবং জমিতে সরাসরি বীজ ছিটিয়ে

আগাম ফসল ও বীজ উৎপাদন করার জন্য ভালোভাবে জমির তৈরি করার পর ছোট আকারের আস্ত পেয়াজ কন্দ লাগানো হয়। পেঁয়াজ ২ সেমি. এর বেশি চওড়া হলে খরচ বেশি হয়। অনেক সময় এর অর্ধেক অংশ কেটে মূলসহ গোড়ার অংশ লাগানো হয়।

শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই অর্থাৎ আশ্বিন-কার্তিক মাসের মধ্যেই পেঁয়াজ লাগাতে হবে। দেরিতে লাগালে গাছ ভালোভাবে বাড়ার আগেই ফুল চলে আসে, তাতে বীজের উৎপাদন অনেক কমে যায়। ৩০-৩৫ সেমি. দূরে সারি করে সারিতে ১৫-২০ সেমি. দূরে দূরে পেঁয়াজ লাগানো হয়। প্রতি শতক জমিত.৪-৫ কেজি বীজ পেঁয়াজ লাগবে। চারা রোপন করে পেঁয়াজের চাষ করতে হলে প্রথমেই বীজতলায় চারা তৈরি করতে হবে।

আরো পড়ুন: মাছের খাদ্য তৈরির ফর্মুলা ও উপকরণ a to Z

কম্পোস্ট সার, পচা পাতা, গোবর ও ভিটিবালির মিশ্রণে ভালোভাবে বীজতলা তৈরি করতে হবে। ৩ মিটার লম্বা ও ১মি. চওড়া বীজতলায় ২৫-৩০ গ্রাম বীজ বপন করতে হবে। পানি সেচ, আগাছা ও পোকা-মাকড় দমন এবং অন্যান্য যত্ন নিয়ে চারা বড় করে, চারার বয়স ৪০-৫০ দিন হলে তুলে নিয়ে জমিতে লাগাতে হবে। তাতে চারা শক্ত হয় ও জমিতে লাগালে কম সংখ্যায় মারা যায়।

ভালোভাবে জমি প্রস্তুত করার পর ১৫-২০ সেমি. দূরে দূরে চারা লাগাতে হবে। চারা লাগানোর পর চারার গোড়া ভালোভাবে চেপে দিতে হবে এবং হালকা সেচ দিলে পেঁয়াজের খুব ভালো হয়। আশ্বিনকার্তিক মাসে বীজতলায় বীজ বপন এবং অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে জমিতে চারা রোপণ করতে হয়। প্রতি শতক জমির জন্য ১০-১৫ গ্রাম বীজ অথবা ১৫০০-২০০০ টি চারা লাগে।

সরাসরি বীজ বপন করতে হলে প্রথমে জমিকে ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। তারপর ২০-৩০সেমি. দূরে অগতির নালা করে তাতে ১০-১৫ সেমি. দূরে দূরে বীজ রেখে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। অথবা সরাসরি ছিটিয়ে বীজ বপন করে মই দিলেও হয়। তবে এভাবে চাষ করলে যত্ন নিতে অসুবিধা হয়, ফলনও কম হয়।

দেশি এবং বিদেশী পেঁয়াজের জাত এর নাম

দেশি জাতের মধ্যে ফরিদপুর বটি, তাহেরপুরি, ঝিটকা, আর বিদেশী জাতের মধ্যে পাটনা, ট্রপিকাল রেড, পুসা রেড, ইয়েলো গ্রেনেক্স, ইয়েলো ড্রানভার্স, হোয়াইট গ্লোব জাতের ফলন বেশি হয়। কিন্তু বিদেশী জাত বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। এছাড়া দেশী জাতের ঝাঁঝালো গুণ অনেকে পছন্দ করে। পেঁয়াজের উন্নত জাত হচ্ছে বারি পেঁয়াজ।

পেঁয়াজে প্রতি শতক জমিতে সারের পরিমাণ

প্রতি শতক জমিতে সারের পরিমাণ টেবিল আকারে দেওয়া হল:👇

গোবর ৪০ কেজি
ইউরিয়া ১ কেজি
টিএসপি ৮০০ গ্রাম
এমপি ৬৫০ গ্রাম

শেষ চাষের সময় সবটুকু গোবর, ফসফেট দিতে হবে। ইউরিয়া ও এমপি সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে। বাকি ইউরিয়া ও এমপি চারা রোপণের ২৫ এবং ৫০ দিন পর দুই কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

পিয়াজের জমি পরিচর্যা এবং সেচ

জমিতে রস না থাকলে প্রতি ১০-১৫ দিন পর পর হালকা সেট দিতে হবে। এছাড়া আগাছা দমন ও মাটি আলগা রাখা দরকার এতে পেঁয়াজ মোটা এবং ভালো বসে। পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য ফুলের কলি দেখা দেয়া মাত্র তা ভেঙ্গে দিতে হবে। পোকা মাকড়ের আক্রমণ হলে তা দমন করতে হবে, তাহলে উচ্চফলন এর আশা করা যায়।

আরো পড়ুন: বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি - ২ টি রোগ পোকামাকড় ও প্রতিকার

পেঁয়াজ সংগ্রহ ও ফলন

পেঁয়াজের কাছে পরিপক্কতা আসলে গাছের নিচের দিকের পাতা নরম হয়ে আসে এবং গাছ ঢলে পড়ে। বেশিরভাগ গাছ এ অবস্থায় আসলে পেঁয়াজ তুলতে হবে। পেয়াজ সংগ্রহের পর পেঁয়াজের কন্দ থেকে ৫-৬ সেমি. লম্বা রেখে কাটতে হবে এবং ছায়ায় শুকিয়ে বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। ফলন প্রতি শতক জমিতে ৫০-৭০ কেজি।

বৃষ্টিবহুল এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিলে দেরি না করে পেঁয়াজ তুলে ফেলতে হবে। বৃষ্টিতে ভিজলে সে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে অসুবিধা হয়।

উপসংহার - শেষ কথা

আলহামদুলিল্লাহ আশা করি পুরো কনটেন্টটি পড়েছেন, যদি এমনভাবে ফসল আবাদ করা যায় তাহলে উচ্চ ফলন আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ। আমাদের কনটেন্টটিতে চাষাবাদ সহ, ইসলাম শিক্ষা বিভিন্ন চাষাবাদ পাবেন সেগুলো পড়ে আসতে পারেন আশা করি ভালো লাগবে। ভালো থাকবেন আসসালামু আলাইকুম।

ধন্যবাদ-Thanks.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
Comment মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url