মরিচ চাষের পদ্ধতি ও ফলন বৃদ্ধির ৭টি কৌশল
মরিচ একটি নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা ফসল। এবং লাভজনক চাষাবাদ, আপনি যদি মরিচ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জানতে চান এবং লাভবান হতে চান তাহলে মরিচ চাষের পদ্ধতি এই কনটেন্টি আপনার জন্য।
কাঁচা মরিচে ভিটামিন এ ও সি বিদ্যামান। ঝাল ও মিঠা দু ধরনের মরিচ পাওয়া যায়। এদেশে ঝাল মরিচের কদর বেশি। তবে কিছু পরিমাণে মিঠা মরিচেরও চাহিদা আছে। পারিবারিক বাগানে প্রায় সবাই মরিচের চাষ করেন।
সূচিপত্র: মরিচ চাষের পদ্ধতি
- মরিচ চাষের পদ্ধতি
- উৎপাদন মৌসুম ও জাত
- জমি তৈরি ও চারা রোপণ
- সার প্রয়োগ ও পরিমান
- পরিচর্যা (মরিচ চাষের পদ্ধতি)
- ফসল সংগ্রহ ও ফলন
- শেষ কথা
বসত বাড়ির ধারে কাছে ৩-৪টি বারোমাসি মরিচের গাছ থাকলে পরিবারের দৈনিক চাহিদা সহজেই মেটানো যায়। মরিচ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে এবং আপনাকে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে এই আর্টিকেলটি সাহায্য করবে।
মরিচ চাষের সঠিক পদ্ধতি
আমাদের প্রথমে মরিচ চাষের পদ্ধতি জন্য খোলামেলা আলো-বাতাস পূর্ণ জমি নির্বাচন করতে হবে। আংশিক ছায়াতেও মরিচ চাষ করা যায়। তবে মরিচ গাছ খরা ও জলাবদ্ধতা দুটোতেই ক্ষতিগ্রস্ত সম্ভাবনা বেশি।
তাই মরিচ চাষে সেচ ও নিকাশের ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে। প্রায় সব ধরনের মাটিতে মরিচ চাষ করা যায়। তবে মরিচ চাষের জন্য পলি-দোআঁশ মাটি উত্তম।
মরিচের উৎপাদন মৌসুম ও জাত
সারা বছরই মরিচ চাষ করা যায়। তবে শীতকালে চাষ বেশি হয়। শীতকালীন ফসলের জন্য ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য চৈত্র-বৈশাখ মাসে বীজ বপন বা চারা রোপন করা হয়।
জাত, ঝাল মরিচ: চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বগুড়ায়, চাঁদপুরী, ফরিদপুরী, হাইমচর, চল্লিশা, উল্টা, বোম্বে, কামরাঙ্গা, কালো মরিচ, ধানি মরিচ, পুষা জাওয়াল।
মিষ্টি মরিচ: বেলপিপার, ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ান্ডার, গুচ্ছ মরিচ ও সূর্যমুখী।
মরিচ চাষের জন্য জমি তৈরি ও চারা রোপণ
মরিচ চাষের পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট জমি তৈরি ও চারা রোপণ। আপনি সরাসরি বীজ বপন বা চারা রোপন করে মরিচের চাষ করতে পারবেন। চারা রোপন করে চাষ করলে ফলন বেশি হয়। ভালোভাবে জমি তৈরি করার পর ৪০-৬০ সেমি দূরে সারি করে সারিতে ৩০-৪০ সেমি দূরে দূরে বীজ বপন করতে হবে।
চারা রোপন করতে হলে বীজতলায় চারা তৈরি করে চারার বয়স ৪০ থেকে ৪৫ দিন হলে একই দূরত্বে যারা রোপন করতে হবে। ১২ মাসী যাদের বেলায় চারা আরো পাতলা করে লাগাতে হবে।
প্রতি শতক জমিতে বীজের পরিমাণ সরাসরি বপন করলে ৪০-৬০ গ্রাম ও চারা তৈরি করে রোপন করলে ১০-১২ গ্রাম এবং চারার সংখ্যা প্রায় ১৫০০-২০০০ টি চারা গাছ লাগে।
জমিতে সার প্রয়োগ ও পরিমান
মরিচ চাষের পদ্ধতি আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সার প্রয়োগ ও পরিমান। আপনারা অনেকেই মরিচ চাষের জন্য সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করেন না। প্রতি শতক জমির জন্য সঠিক মাত্রাই সারের পরিমাণ নিম্নরূপ:
গোবর | ২০ কেজি |
ইউরিয়া | ১ কেজি |
টিএসপি | ৫০০ গ্রাম |
এমপি | ৪০০ গ্রাম |
সব সার সর্বশেষ চাষের সময় এবং ইউরিয়া সার ২-৩ কিস্তিতে উপরে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পরিচর্যা (মরিচ চাষের পদ্ধতি)
মরিচের প্রধান প্রধান পরিচর্যার মধ্যে রয়েছে আগাছা দমন, মাটি আলগা রাখা, শুকনা মৌসুমে পানি সেচ ও বর্ষায় নিকাশের সুবন্দোবস্ত করা। পিপড়ার আক্রমণ হেপ্টাক্লোর বা অন্য কীটনাশক দিয়ে দমন করতে হয়।
আরো পড়ুন: উন্নত গম চাষ পদ্ধতি ৪ টি জাত ও বৈজ্ঞানিক নাম কি
জমি থেকে ফসল সংগ্রহ ও ফলন
চারা লাগানোর দেড় মাস পর হতে কাঁচা মরিচ সংগ্রহ করা যায় এবং বেশ কিছুদিন ধরে নিয়মিত ফসল তোলা যায়। ফল অবশ্যই বোটাসহ সংগ্রহ করতে হবে নতুবা ফলন অনেক কমে যায়। ভালো শুকনা মরিচ পেতে হলে ফল সামান্য রঙ ধরলে তা রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।
প্রতি শতক জমিতে ২০-৩০ কেজি কাঁচা মরিচ ও ৫-৬ কেজি শুকনা মরিচ পাওয়া যায়। ভুট্টার জমিতে সাথী ফসল হিসেবে মরিচের চাষ করা যায়। শতকরা ১০০ টি মরিচ গাছের সাথে ২০ টি ভুট্টা গাছ আন্তঃফসল।
লেখকের শেষ কথা - উপসংহার
আলহামদুলিল্লাহ, আশা করি সঠিক ফলন পেতে এবং মরিচ চাষের পদ্ধতির জন্য যথেষ্ট কার্যকর এই কনটেন্টি। ইসলামের দৃষ্টিতে কৃষি নিঃসন্দেহে একটি উত্তম কাজ।
ধন্যবাদ-Thanks.
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url