লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ ৯ টি পয়েন্ট
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, এমন একটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি এর পরিধি অনেক অনেক বড় তবে আপনি এই আর্টিকেলটি পড়লে সংক্ষেপে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সম্পর্কে নিচে একটি সূচিপত্র দেওয়া হয়েছে এবং অল্প কিছু পয়েন্ট সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা ধৈর্য সহকারে পয়েন্টগুলো পড়ুন আল্লাহ চাইলে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন।
(নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন)
সূচিপত্র: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ - ইসলামের মূল বিশ্বাস ও তাৎপর্য
- তাওহিদের অর্থ কি?
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ কি?
- মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর অর্থ কি?
- ৪ টি কালিমার গুরুত্ব এবং ফজিলত
- ঈমান ও আমলের গুরুত্ব
- ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভ
- মানুষের জীবনে কালিমার প্রভাব
- ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
- উপসংহার - শেষ কথা
তাওহিদের অর্থ কি?
তাওহিদের অর্থ: আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ, আমাদেরকে পরিপূর্ণ মুসলিম হতে হলে আগে তাওহীদের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
তাওহিদের তিনটি প্রকারভেদ,
(১) তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ যেমন: আল্লাহ তাআলা পালনকর্তা, রিজিক দাতা, জীবন মৃত্যু, সকল কিছু তার হাতে এবং আল্লাহ তায়ালা এক, এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করাই, তাওহীদে রুবুবিয়্যাহ।
(২) তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ যেমন: এবাদতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার এবাদত করতে হবে, শুধুমাত্র আল্লাহ তা'আলা কেই সেজদা করতে হবে অন্য কাউকে করা যাবে না, কোন মাজারে মানত করা যাবে না, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ করা যাবে না, অন্য কারো কাছে দোয়া করা যাবে না,তাওহিদুল উলুহিয়্যাহ।
(৩) তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত যেমন: আল্লাহ তাআলার গুণবাচক যে নামগুলো আছে সেগুলোর উপর বিশ্বাস করা, আমল করা ও পরিবার-পরিজন সহ সকলের মাঝে পৌঁছে দেওয়াই তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ কি?
لا اله নেই কোন মা'বুদ الا الله আল্লাহ ছাড়া যেমন: কেবলমাত্র আল্লাহই মা'বুদ যার আমরা এবাদত করি। اله শব্দ কোরআন শরীফে ১৪৭ বার এসেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক নবী রাসুলের মুখে একটাই শব্দ ছিল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ যার, অর্থ নেই কোন মাবুদ আল্লাহ ছাড়া।
اله এর আরো একটা অর্থ আইন দাতা, তাহলে لا اله যার অর্থ দাঁড়ায় কোন আইনদাতা নাই, কোন বিধানদাতা নাই, الا الله আল্লাহ ছাড়া।
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর অর্থ কি?
محمد رسول الله অর্থ: মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহ তাআলার রাসূল। আমরা প্রথমে আল্লাহ তাআলার দাসত্ব এবাদত করব, কিন্তু কিভাবে করব সেজন্য আল্লাহ তাআলা রসূলকে দিয়ে সকল কিছু দেখিয়ে দিয়েছেন, আর সেজন্য রাসুল আমাদের মডেল তাকে আমরা অনুসরণ করব।
সে কিভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, সে কিভাবে নামাজ আদায় করেছেন, সে কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, সকল কিছু আমরা তাকে অনুসরণ করেই করব, আর সেজন্যই রসূল আমাদের মডেল
এবং আল্লাহ তা'আলা বলেন: وما ارسلناك الا رحمه للعالمين
উচ্চারণ: অয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রহমাতাল্লিল আলামিন।
অর্থ: আমি রাসূলকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসাবেই প্রেরণ করেছি (সূরা আম্বিয়া আয়াত - ১০৭)
৪ টি কালিমার গুরুত্ব এবং ফজিলত
৪ টি পবিত্র কালিমা
- (১) কালিমা ত্বইয়্যিবাহ
- (২) কালিমা শাহাদত
- (৩) কালিমা তাওহীদ
- (৪) কালিমা তামজীদ
(১) لا اله الا الله محمد رسول الله উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার রাসূল।
(২) اشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له واشهد ان محمدا عبده ورسوله উচ্চারণ: আশাহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু ওয়াআশহদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলূহ।
অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই, তিনি এক তাহার কোন অংশীদার নেই, আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সা) আল্লাহ তা'আলা শ্রেষ্ঠ বান্দা ও প্রিয় রাসূল।
(৩) لا اله الا انت واحدا لا ثانيه لك محمد رسول الله امام المتقين رسول رب العالمين উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা ওয়াহিদাল্লা ছানিয়ালাকা মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহি ইমামুল মুত্তাকীনা রাসূলু রব্বিল আ লামিন।
অর্থ: মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ (রব) নেই, তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। হযরত মুহাম্মদ (সা) মুত্তাকিনদের ইমাম এবং আল্লাহর প্রেরিত রসূল।
(৪) لا اله الا انت نور يهدي الله لنوره من يشاء محمد رسول الله امام المرسلين خاتم النبيين উচ্চারণ: লা-ইলা-হা ইল্লা আনতা নূরাইইয়াহ দিয়াল্লা-হু লিনুরিহী মাইয়্যাশা-য়ু, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা হি ইমা মুল মুরসালীনা খতামুন নাবিইয়ীন।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, তুমি জ্যোতি ময়। তুমি যাকে চাও, স্বীয় জ্যোতি দ্বারা সঠিক পথ দেখিয়ে থাকো, মুহাম্মাদ (সা) প্রেরিত রাসুলগানের ইমাম এবং শেষ নবী।
ঈমান ও আমলের গুরুত্ব
মহান আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে পৃথিবীতে সৃষ্টির পর সত্য ধর্ম সহ যুগে যুগে বহু নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন, আর তারা আল্লাহ তায়ালার মহিমা গুণগান পরিচয় মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন, মানুষের মধ্য হতে এ দিন যারা গ্রহণ করেছে তারাই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলকাম।
আর যারা অবিশ্বাস করেছে বা প্রত্যাখ্যান করেছে তারা ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মহান আল্লাহ তা'আলা কে মানা বা বিশ্বাস করার মূল মন্ত্রই হলো কালিমার স্বীকৃতি দেওয়া, ঈমানদার বান্দাদের উপর মহান আল্লাহ তাআলার বড় একটি রহমত হলো কালিমার স্বীকৃতি প্রদান করা আর একজন মানুষকে মুক্তি দেওয়ার জন্য এ কালিমা স্বীকৃতি যথেষ্ট।
আরো পড়ুন: কোরআন থেকে মুসলিম ছেলেদের আধুনিক জনপ্রিয় ২০০টি নাম
একদিন এক ব্যক্তি মোহাম্মদ (সা) এর কাছে হাজির হলেন আর তিনি ছিলেন অনেক বৃদ্ধ আর বৃদ্ধ লোকটি কাঠের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে ছিলেন এমন অবস্থায় তিনি আরজ করলেন হে আল্লাহর রাসূল আমি অনেক গুনহা করে ফেলেছি আর আমার শরীর ভরে আছে গুনাই, আমার জন্য কি ক্ষমা হতে পারে।
রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন তুমি কি এ সাক্ষ্য দাও না যে আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই? কেন নয় অবশ্যই এ সাক্ষ্য দিই,আরো সাক্ষ্য দিই আপনি আল্লাহ তা'আলা রাসূল। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন তাহলে তো তোমার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়েছে।
একবার মূসা (আ) আল্লাহকে বললেন ইয়া আল্লাহ আমাকে এমন একটা জিকির শিখিয়ে দেন যে জিকিরটা শুধু আমি আর আপনি জানবেন আর পৃথিবীর কেউ জানবে না, তখন আল্লাহ বললেন তাই , তখন আল্লাহ তা'আলা বললেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ তখন মূসা (আ) আল্লাহকে বললেন এই জিকির তো সবাই জানে, তখন আল্লাহ তা'আলা বললেন এটাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জিকির (সুবহানাল্লাহ)
ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভ
ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভ।
১.কালেমা, আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা এবং তা মনে প্রানে বিশ্বাস করা।
২.সালাত কায়েম করা।
৩. যাকাত আদায় করা।
৪. হজ্জ সম্পাদন করা এবং
৫. রমজানের সিয়ামব্রত পালন করা। (সহীহ বুখারী, অধ্যায়:২, হাদিস নাম্বার: ৮)
মানুষের জীবনে কালিমার প্রভাব (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ)
ধুধু মরুভূমিতে যেমন মানুষের জন্য খাবার পানি পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায় ঠিক তেমনি একজন মানুষের জীবনে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর আদর্শ এবং আল্লাহর দেওয়া বিধানের প্রভাব না থাকলে ঠিক তেমনি অবস্থা হয়েছে যায়। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন এই আলোচনাটি অনেক বড় এবং দীর্ঘ তবে আপনি যদি বোঝার চেষ্টা করেন তাহলে সংক্ষেপে এতটুকুই যথেষ্ট।
ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
উপসংহার - শেষ কথা
আমরা মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত আমাদের পরিচয়, আমাদের আল্লাহ, আমাদের রাসূল, সম্পর্কে প্রতিদিন অল্প একটু হলেও জানার চেষ্টা করা। আল্লাহ আমাদেরকে সহজ সরল সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন (আমীন)
ধন্যবাদ-Thanks
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url