ঐতিহাসিক বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি ও কি কি - ৮
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের অধিকাংশ মানুষ নদীর উপর নির্ভরশীল। নদী আছে বলে হয়তো তারা আজকে জীবন জীবিকায় সনির্ভরশীল হয়ে চলতে পারছে। নদ নদী আমাদের অর্থনৈতিকভাবে অনেক উপকৃত করে। কৃষি প্রধান আমাদের এই দেশে বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো নিচে দেওয়া হল
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন
সূচিপত্র: বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি
- নদীর উৎপত্তি
- বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি
- বাংলাদেশের নবীনতম নদী
- বাংলাদেশের জাতীয় নদী
- মাছে ভাতে বাঙালি বলার কারণ
- বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির অথনৈতিক উন্নয়ন
- বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির উপকারিতা
- বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির অপকারিতা
- উপসংহার বা শেষ কথা
নদীর উৎপত্তি
সাধারণত পাহাড় উঁচু ভূমি ঝরনা ধারা থেকে সৃষ্ট ও বরফ গলিত স্রোত এবং নানা কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পরিবর্তন হয় প্রকৃতি আর এই নদী খাতের সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার ফুট উচু পাহাড় তৃীব বেগে ধেয়ে আসে জলরাশি আর এ জলরাশীতে প্রচন্ড রকমের চাপ সৃষ্টি হয়।
জলরাশীতে প্রচন্ড গতিতে ধেয়ে আসার ফলে জল স্রোত স্তলভূমি অতিক্রম করার সময় নদী বলে অভিহিত করা হয়। আর এ নদী একটা দুইটি নদীতে নয় অনেক নদীতে পরিণত হয় ।
বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি
আমাদের দেশের নদ-নদীর সংখ্যা অনেক। তারমধ্যে প্রধান প্রধান নদী রয়েছে। যেগুলো আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত।
আরো পড়ুন: পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম নদী কোনটি
নিচে বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির নাম দেওয়া হলো:
- পদ্মা,
- মেঘনা
- যমুনা
- ব্রহ্মপুত্র
- তিস্তা
- কর্ণফুলী
- সাঙ্গু
- পশুর ইত্যাদি
আরো অনেক বেশ কিছু নদী রয়েছে। এসব নদীগুলো আমাদের জীবনের বড় অংশ। আমাদের এই বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে অনেক নদী প্রবাহিত হয়েছে। এ ক্ষুদ্র বাংলাদেশে অসংখ্য নদ নদীর সমারোহ। তাই আমাদের দেশকে নদীর দেশ বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশের নবীনতম নদী
আমাদের দেশের প্রধান নদী গুলোর মধ্যে যমুনা নদী অন্যতম একটি নদী । যমুনা নদীকে বাংলাদেশের নবীনতম নদী বলা হয়ে থাকে। ১৭৮৭ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প হওয়াতে এ নদীর উৎপত্তি হয়ে থাকে।
যমুনা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪০ কিলোমিটার। আমাদের এই যমুনা নদী গোয়ালন্দের কাছে পদ্মা নদীর সাথে একত্রিত হয়েছে। এই নদী কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছ। এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। এ নদীর প্রধান প্রধান উপনদী নদীগুলো হল তিস্তা, ধরলা, আত্রাই, করতোয়া ইত্যাদি নদী। আর আমাদের বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি প্রধান নদী গুলোর মধ্যে যমুনা নদীকে নবীনতম নদী বলা হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় নদী
বাংলাদেশে আসলে পদ্মা নদীকে জাতীয় নদী বলা হয়। বাংলাদেশের প্রধান নদীর মধ্যে পদ্মা নদীকে জাতীয় নদীকে আখ্যা দেওয়া হয়। এই নদীর সাথে আমাদের জীবনের প্রাত্যহিকভাবে ওঠাবসা।
আরো দেখুন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৃষ্টিনন্দন জায়গা গুলোর ছবি
পদ্মা নদী আমাদের জীবনের চলার পথের প্রধান অন্তরায়। পদ্মা নদীকে কৃীতিনাশা নদী ও বলা হয়ে থাকে। পদ্মা নদীর অবস্থান হিমালয়ের গাঙ্গেত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গা নদী। এ নদীর দৈর্ঘ্য ৩৫৬ কিলোমিটার।
মাছে ভাতে বাঙালি বলার কারণ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের নদীরপাড়ে বসবাস করা অনেক মানুষই এখনো মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। প্রায় ৭০ % মানুষ এখনো নদী থেকে মাছ ধরে জীবন পরিচালনা করে ও মাছের চাহিদা মেটায়। মাছ বাঙালির জাতীয় প্রিয় খাদ্য, মাছ ছাড়া বাঙালি বলা যায় অচল।
জিডিপির গবেষণায় দেখা গেছে ৩.৬১% মৎস্য খাতের এর অবদান রয়েছে। পদ্মা নদীতে আনেক রকমের মাছ পাওয়া যায়। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। আর এ মাছের গুরুত্ব দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। আর ইলিশ মাছের চাহিদা এদেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিমাণে পাওয়া যায়।
আমাদের বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি গুলোর মধ্যে পদ্মা অন্যতম নদী। আমাদের এই পদ্মা নদীতে পাওয়া যায় এ ইলিশ মাছ। যা আমাদের খাদ্য পুষ্টি যোগান দিয়ে থাকে। মাছ বাঙালির প্রিয় খাদ্য। তাই বাঙালিকে, মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয়।
বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির অথনৈতিক উন্নয়ন
নদী খাতে বাংলাদেশের প্রধান নদী গুলো অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ৬০ শতাংশ মানুষ আমাদের দেশে মোট জনসংখ্যার প্রাণিজ গ্রহণের জন্য একমাত্র নদী খাতের উপর নির্ভরশীল। পানীয় জলের সিংহভাগ প্রায় ১৮ শতাংশ আসে আমাদের নদী থেকে।
প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ যাত্রী হিসেবে নো পথে চলাচল করে। এছাড়া নদী খাতে অনুমান করা যায় যে প্রায় ৭০০টি নদীপথে নৌযান ও পণ্য অবাধে চলাফেরা করে এবং এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। এবং দেশকে আর্থিকভাবে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এক দেশের পণ্য অন্য দেশে আমদানি ও রপ্তানিতে সাহায্য করে।
বাণিজ্য শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এছাড়াও বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের উন্নয়নে এই নদীখাত বা নদী পথ অপরিহার্য। এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী আনা নেওয়ার ফলেও অর্থ আনয়নে অবদান রাখে। এমনকি নদীগুলো পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
দেশ-বিদেশের মানুষ এই নদীর আনন্দ উপভোগ করতে আসে। অনেক জায়গায় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে এই নদীকে কেন্দ্র করে। অর্থনীতিতে দেশি-বিদেশি মুদ্রা অর্জনে অনেকাংশে অবদান রেখে চলেছে।
বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির উপকারিতা
নদীর উপকারের কথা হয়তো বলে শেষ করা সম্ভব নয়। আমাদের এই সুন্দর বাংলাদেশকে সৌন্দর্যপূর্ণ গড়ে তোলার পেছনে নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। নদীর বুকে গড়ে তুলেছে অনেক জেলে তাদের বাড়ি ঘর। সেখান থেকে তারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। তারা দুবেলা দু মুঠো ভাত খাওয়ার জন্য এই নদীর ওপর এই নির্ভর করে থাকে।
বেকারত্ব দূর হয় এই নদী খাতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করার ফলে। নদীর পানিতে বয়ে আসে পলিমাটি। আর এ মাটি জমিকে করে তোলে উর্বর। এই উর্বর জমিতে ফসল ফলানোর ফলে কৃষিতে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন সাধন হয়।
আরো পড়ুন: আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে
এছাড়া পরিবহন অর্থাৎ নৌপথে নদীকে ব্যবহার করে এক শ্রেণীর মানুষ তাদের জীবন জীবিকা পরিচালনা করছে। আমাদের জীবনের সাথে বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি এবং অন্যান্য নদী গুলো জড়িয়ে গেছে।
আর এভাবেই আমাদের এসব প্রধান নদী গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শুধু প্রধান নদী গুলোই নয় কিছু কিছু উপনদীও আমাদের জীবনের সাথে একেবারে মিশে গেছে। আমাদের প্রধান নদী গুলোর মধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও কর্ণফুলীর তীরেই গড়ে উঠেছে আমাদের মানব সভ্যতা।
বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টির অপকারিতা
নদীর অপকারিতা গুলো আমাদের চোখে পড়ে। যার উপকার আছে তারই অপকার আছে। আমাদের দেশে প্রায় বর্ষাকালে নদীর পানি গুলো ফুলে ফেপে ওঠে। যার ফলে শুরু হয় বন্যা। অনেক ক্ষয়ক্ষতি শিকার হতে হয়।
কখনো কখনো নদীর স্রোতের প্রবল বেগ অনেক গ্রামকে তলিয়ে নিয়ে চলে যায়। হারাতে হয় অনেককে বাসস্থান । এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের জমি জমা বাড়ি-ঘোয়ার হাঁস মুরগি গবাদি পশুসহ অনেক কিছুই। তাছাড়া অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। কখনো কখনো নদীরে ভাঙ্গন একটি পরিবারকে নিঃশেষ করে ফেলে। মৃত্যুবরণ করতে হয় অনেক মানুষকে।
কোন এক গবেষণা দেখা গিয়েছে যে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে নদী ভাঙ্গনে শিকার হতে হয়। আমাদের দেশে প্রধান বা বৃহত্তম নদী গুলো অনেক বড় হওয়ায় এর অনেকটাই বিস্তরজুড়ে এদেশের মানুষের ঘরবাড়ি স্থাপন করে থাকে। যার কারনে বন্যা বা বন্যা কবলিত হলে অনেক মানুষকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
উপসংহার বা শেষ কথা
বাংলাদেশের এসব প্রধান নদ নদী গুলো দেশের ইতিহাসে ব্যাপকভাবে ইতিহাস উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অগণিত বাঙালির জীবন-জীবিকায় নদী বিশেষভাবে অবদান রাখছে।এছাড়াও একসময় নদীর তীরে গড়ে উঠতো অনেক রকমের মেলার বাজার।
আমাদের বাংলাদেশের প্রধান নদী কয়টি অর্থনৈতিক খাতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক কথায় নদী আমাদের জীবন ধরার মতোই প্রবাহিত। তাই নদী বাঁচলে আমরাও বাঁচবো।
কৃষি প্রধান এ দেশে নদী কৃষি ক্ষেত্রে এর অবদান বলে শেষ করা যায় না। মাঝে মাঝে নদীতে পলি পরে মাটিকে উর্বর করে। নদীমাতৃক এদেশে নদী ছাড়া চলা অসম্ভব।
ধন্যবাদ-Thanks
আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url