ধনী হওয়ার শক্তিশালী ১টি আমল

মানুষ চাই তার জীবনের অর্থ, ধন সম্পদের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে সুন্দর একটি জীবন যাপন করতে। আর সুন্দর জীবন যাপনের জন্য ইসলাম একমাত্র ধর্ম সেজন্য কোরআন এবং হাদিস থেকে ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল গুলো নিচে উপস্থাপন করা হয়েছে।

image

আপনি যদি ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল গুলো জেনে বুঝে সঠিকভাবে পালন করতে পারেন ইনশাআল্লাহ আপনি সফলকাম হবেন। এবং ধনী সম্পদশালী হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন।

নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান ক্লিক করুন👇

সূচিপত্র: ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল

ভূমিকা

প্রথমেই আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি একজন গোলাম এবং আপনার একজন মালিক আছে শুধু তাই না, আপনার মালিক আপনাকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য একজন মডেল দিয়েছে তিনি হচ্ছেন (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।

ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল সম্পর্কে (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে কি বলেছেন? এটা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হালাল এবং সঠিক পথে অর্থ উপার্জন করে ধনী হওয়ার জন্য যেমন ওসমান গনি রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু সহ আরো অনেকের মত।

আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের তালিকাভুক্ত হয়ে নৈকট্য অর্জন এবং ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল গুলো দেওয়া হলো:

ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল

আমরা সকলেই ধনী হতে চাই অন্যের উপর নির্ভর করে চলতে অপছন্দ করি ✅। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ভিক্ষাবৃত্তি অপছন্দ করতেন।

আরো পড়ুন: মুমিন কাকে বলে ঈমানের ফল কি?

ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল

  1. তাসবীহ পাঠ করা
  2. আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা
  3. দান সদকা করা
  4. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা
  5. তাওবা / ইস্তেগফার
  6. আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক

অবশ্যই আপনি ইসলামের মূল ভিত্তি গুলো মেনে চলবে এবং এই আমল গুলো করবেন তাহলে আপনার সফলতা ১০০% নিশ্চিত। কারণ আল্লাহ নিজেই আল কুরআনে বলছেন, আমি আমার বান্দার জন্য একাই যথেষ্ট। (সুবহানাল্লাহ)

কোরআনের আয়াত

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে আপনাদেরকে ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমলের প্রাসঙ্গিক একটি কোরআনের আয়াত উপস্থাপন করছি। আশা করি কোরআনের এই আয়াত থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। এরকম আরো অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সাহায্য এবং সফলতার কথা বলেছেন।

অনুগ্রহ করে কোরআনের অনুবাদ এবং তাফসীর থেকে বিস্তারিত পড়ে নিবেন।

(সুরা তালাক, আয়াত নং ৩)

আল্লাহ বলেন, এবং তাকে সেখান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন।

এই কথা আল্লাহ বলছেন, একবার ভাবুন তো আপনি যদি আল্লাহর হয়ে যান এবং আল্লাহ যদি আপনার দায়িত্ব নিয়ে নিন তাহলে কি আর কোন সমস্যা কে সমস্যা মনে হবে? অবশ্যই না।

ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল তাসবীহ পাঠ করা

প্রথমে আপনি যে আমল কি করবেন "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম" আল্লাহর অত্যন্ত পছন্দের শব্দ, এই তাসবীহ আপনি যখন সময় পাবেন তখনই পড়বেন। ছোট্ট একটি আমল কিন্তু এর মহত্ব এবং ফজিলত অনেক অনেক... বেশি।

আরো পড়ুন: খালিদ বিন ওয়ালিদ কে ছিলেন - বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম বীর

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে এসে এক সাহাবী বললেন হুজুর আমি অভাবি মানুষ আমার অভাব দূর হয় না।হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সাহাবীকে বললেন তুমি বেশি বেশি "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি" এই তাসবীহ বেশি বেশি পাঠ করবা। সাহাবী তো বুঝে গেলেন গুলি করলে গুলি মিস হবে কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সা:) আমাকে যে তাসবীহ শিখিয়ে দিয়েছেন তা মিস হবে না।

সাহাবী বাড়ি চলে গেলেন তিনি নিজে এই আমল করে এবং তার বিবিকে এই আমল করতে বলে। এক বছর পর হুজুরের সামনে ওই সাহাবী এসে বলে হুজুর আমার উপর যাকাত ফরজ হয়েছে আপনি আমার এই যাকাতের টাকা নিন। (সুবহানাল্লাহ)

আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা

সফল হতে হলে আল্লাহর উপর অন্ধের মত বিশ্বাস রাখতে হবে। আমার বলতে একমাত্র আল্লাহ আমার সবচেয়ে কাছের। আমার পরনের কাপড়টি আমার শরীরের থেকে যত কাছে তার থেকেও কাছের আমার আল্লাহ।

তিনি গোপনে, প্রকাশ্য, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সমস্ত কিছু জানেন তিনি উচ্চ মর্যাদাশীল, জ্ঞানময় প্রজ্ঞাময় তিনি মহান। আল্লাহ প্রতিটা সেকেন্ড প্রতিটা মুহূর্ত আমাদেরকে দেখছেন। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বদা রক্ষণাবেক্ষণকারী। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে তাঁরই। (সুবহানাল্লাহ)

ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল দান সদকা করা

অর্থ সম্পদশালী হতে হলে আপনাকে দানশীল হতে হবে একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দান করতে হবে। দান করলে সম্পদ বৃদ্ধি পায় এর একটি হাদিস উপস্থাপন করা হলো:

একজন ব্যক্তি হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর কাছে এসে বললেন হুজুর আমাকে সাহায্য করুন। হযরত মুহাম্মদ (সা:) ছেলেটিকে বললেন তোমাকে কিছু নেই তিনি বললেন আমার একটি কম্বল এবং একটি পাত্র আছে। হযরত মুহাম্মদ (সা:) বললেন তোমার কম্বলটা নিয়ে এসো। এরপর হযরত মুহাম্মদ (সা:) কম্বলটা বিক্রি করে একটি কুড়াল কিনে দামাদ লাগিয়ে ছেলেটিকে দিলেন এবং ছেলেটিকে বললেন বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করবে। ১০ দিরহাম উপার্জন করে হযরত মুহাম্মদ (সা:) বললেন, গত কয়েকদিনে আমি ১০ দিরহাম অর্থ উপার্জন করেছি।

আরো পড়ুন: আরো পড়ুন: কৃষি শিক্ষা - ইসলামের দৃষ্টিতে নিঃসন্দেহে উত্তম কাজ

হযরত মুহাম্মদ (সা:) ছেলেটিকে বললেন তুমি যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করবে তার তিনটি ভাগ করবে (১) নিজের জন্য (২) আত্মীয়-স্বজনের জন্য (৩) গরিব মিসকিনদের জন্য। ছেলেটি টাকা উপার্জন করে এবং খরচ করে। হযরত ওসমান (রা:) এ সময় শ্রেষ্ঠ ধনীদের মধ্যে এই ছেলেটি একজন। (সুবহানাল্লাহ)

আশা করি আপনারা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে সক্ষম দান করলে সম্পদ কমে না বরং সম্পদ বৃদ্ধি পায়। আপনারা চেষ্টা করবেন গোপনে দান করার। গোপনে দান সবচেয়ে উত্তম। আল্লাহ আমাদের সকলকে বোঝার এবং আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা

আল্লাহ তাআলা কৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে বেশি পছন্দ করেন। কৃতজ্ঞতা মানুষকে উপরে উঠতে এবং মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভালো কিছু দেখলেই সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, এই তাসবীহ গুলো বেশি বেশি পাঠ করবেন এই তাসবীহ গুলো আল্লাহর পছন্দের তাসবীহ। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, এর অনেক ফজিলত রয়েছে। আপনারা ফরজ নামাজের পর চেষ্টা করবেন এই তাসবীহগুলো পাঠ করার।

তাওবা ইস্তেগফার

তাওবা - ইস্তেগফার এর একটি উদাহরণ দিলে আপনারা বুঝতে পারবেন। হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন, এক জামানার অনেক বড় মুহাদ্দিস (ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল) তিনি একটি মসজিদে নামাজ পড়ে বসে আছেন সবাই নামাজ পড়ে চলে গেছে এরপর মসজিদের নাইট গার্ড তাকে না চিনতে পেরে মসজিদে বাইরে যেতে বলে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বাইরে চলে আসেন।

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বাইরে এসে দেখে এক রুটি ওয়ালা রুটি বানাচ্ছে। আর বলছে আস্তাগফিরুল্লাহ, তাওয়াতে রুটি দিচ্ছে আর বলছে আস্তাগফিরুল্লাহ, যাই করে আর উচ্চারণ করে আস্তাগফিরুল্লাহ। তাকে বলল বাবা তোমার এখানে বসে আগুনের তাপ নেওয়া যাবে (ঠান্ডার সময়) রুটি বিক্রেতা বলে অবশ্যই। কোন সমস্যা নেই বসেন। এরপর কথোপকথন চলতে থাকে একপর্যায়ে রুটি বিক্রেতা বলে আমি মুস্তাজাবুদ দাওয়া। আল্লাহ আমার জীবনের একটা দোয়া ছাড়া সব দোয়া কবুল করে নিয়েছে।

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের কৌতুহল বেড়ে গেল কি? একটা দোয়া ছাড়া সব দোয়া কবুল হয়েছে কি সে দোয়া যেটা কবুল হয়নি। রুটি বিক্রেতা বলে শুনেছি এই জামানার শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল আমার ইচ্ছা আমি তার হাতে হাত রেখে মুসাফা করব এবং তার কপালে একটি চুমু একে দিব। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল চোখের পানি ছেড়ে দিলেন আর বললেন তোমাকে কষ্ট করে সেই মুহাদ্দিসের কাছে যেতে হবে না, আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল। (সুবহানাল্লাহ)

আশা করি এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে আপনারা বুঝতে পেরেছেন তাওবা-ইস্তেগফার এর ফজিলত। তাই আপনার চেষ্টা করবেন বেশি বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করার।

আত্মীয়-স্বজনের সাথে সম্পর্ক

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আত্মীয়তা ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এছাড়াও আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুন্দর আচরণ এবং সম্পদ থাকলে কিছু সম্পদ দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতায় করলে আপনার সম্পদে বারাকা নেমে আসবে। (ইনশাআল্লাহ)

উপসংহার - শেষ কথা

(ধনী হওয়ার শক্তিশালী আমল) আপনি যদি একজন গোলাম হয়ে থাকেন এবং আপনার মালিকের প্রদত্ত হযরত মুহাম্মদ (সা:) প্রদর্শিত পথে চলেন তাহলে আপনার সফলতা ঠেকানোর পৃথিবীতে কেউ নাই।💪 আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা চান এবং ছোট্ট একটি আমল "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম" বেশি বেশি পাঠ করুন।

ধন্যবাদ-Thanks

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন 👇🏼 (Share it)

Before. পূর্বের পোস্ট দেখুন After. পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর আইটি ফার্মের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url